রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কাকে বলে? রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক গুলো কি কি

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কাকে বলে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো কি কি,

বাংলাদেশের যে ব্যাংকগুলো রাষ্ট্রীয় মালিকানায় পরিচালিত এবং নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে তাকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের যেসব সাধারন বাণিজ্যিক ব্যাংক রয়েছে তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো মুনাফা অর্জন করা। কিন্তু এক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের উদ্দেশ্য কিছুটা ভিন্ন। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার কল্যাণ সাধন করা এবং দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে আরও বেশি মজবুত করা। যেকোনো দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সর্বদা সে দেশের সরকারের সম্পত্তি।

যেহেতু ব্যাংকগুলো সরকারি মালিকানাধীন, তাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য থাকে জনগণের কল্যাণ সাধন, অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং সামাজিক উন্নয়ন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সংখ্যা ছয়টি। আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমরা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কাকে বলে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক গুলো কি কি এবং ব্যাংক গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কাকে বলে? 

যে ব্যাংকগুলো সরকারি মালিকানাধীন অবস্থায় থেকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন এবং সর্বোপরি জনগণের কল্যাণের উদ্দেশ্যে কাজ করে তাকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক বলে। এক কথায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সম্পূর্ণ মালিকানা সরকারের হাতে থাকে। এই সকল ব্যাংকের মালিক একমাত্র রাষ্ট্র যা সরকারের দায়িত্ব পরিচালিত হয়ে থাকে।বর্তমানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সংখ্যা রয়েছে ৯ টি, যার মধ্যে ৬ একটি হলো বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং বাকি তিনটি হল বিশেষায়িত ব্যাংক। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো সাধারণত কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় রেখে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেগুলো হলো: 

  • দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের লক্ষ্যে তাদের দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি থাকে, 
  • সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সেবা করার সামাজিক দায়িত্ববোধ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক গুলোর উপর বর্তায়,
  • জাতীয় অর্থনীতির স্থিতিশীলতা আনা এ ব্যাংকগুলোর উদ্দেশ্য, 
  • জাতীয় নিরাপত্তা সাধন করা রাষ্ট্রয়ত্ত ব্যাংকের অন্যতম উদ্দেশ্য, 
  • সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন সেবামূলক ধরনের কাজ করে থাকে।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো কি কি

বাংলাদেশের যে ব্যাংকগুলো বর্তমানে আর্থিক লেনদেনের সাথে জড়িত রয়েছে তাদেরকে দুইটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। একটি হলো তালিকাভুক্ত ব্যাংক এবং অপরটি হল অ- তালিকাভুক্ত ব্যাংক। সর্বশেষ ব্যাংকিং আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের তালিকাভুক্ত ব্যাংকের সংখ্যা রয়েছে ৬১টি টি এবং অ – তালিকাভুক্ত ব্যাংকের সংখ্যা রয়েছে ৫ টি। তালিকাভুক্ত যে ৬১ টি ব্যাংক রয়েছে তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংখ্যা হল ৬ টি, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংখ্যা হল ৪৩ টি এবং রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষারিত ব্যাংকের সংখ্যা হল ৩ টি। ৬ টি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের নাম গুলো হল: 

  • সোনালী ব্যাংক, 
  • রূপালী ব্যাংক, 
  • জনতা ব্যাংক, 
  • অগ্রণী ব্যাংক, 
  • বেসিক ব্যাংক, 
  • বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড।

এই ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সরকারের আদেশ-নির্দেশ মেনে এবং সরকারি মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে। নিজে আমরা এই ৬ টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রদান করছি।

 ১) সোনালী ব্যাংক লিমিটেড 

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কাকে বলে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো কি কি,

বাংলাদেশের প্রধান এবং সর্ববৃহৎ রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক হল সোনালী ব্যাংক। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে সোনালী ব্যাংক অন্যতম। দেশের অর্থনীতিতে সোনালী ব্যাংকের অবদান কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না। সোনালী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭২ সালে যা প্রতিষ্ঠাকালে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, ব্যাংক অব ভাওয়ালপুর ও প্রিমিয়ার ব্যাংক এই তিনটি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক্স অর্ডার ও রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ নম্বর ২৬ অনুযায়ী ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। 

তবে প্রতিষ্ঠার বেশ কয়েক বছর পর অর্থাৎ ২০০৭ সাল থেকে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে তাদের ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ‌ বর্তমানে বাংলাদেশে রাষ্ট্রায়ত্ত এই বৃহৎ বাণিজ্যিক ব্যাংক অর্থ সোনালী ব্যাংকের সংখ্যা হল ১২৩৭ টি। সোনালী ব্যাংকের দুইটি শাখা বিদেশেও রয়েছে। সেক্ষেত্রে সর্বমোট সোনালী ব্যাংকের সংখ্যা হল ১২২৯ টি। দেশের প্রতিটি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সোনালী ব্যাংকের শাখা রয়েছে যা অন্য ব্যাংকের নেই। সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এর বর্তমান হেড অফিস ঢাকার মতিঝিলে অবস্থিত। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সোনালী ব্যাংক এর অবদান অনস্বীকার্য।

২) জনতা ব্যাংক লিমিটেড 

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কাকে বলে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো কি কি,

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক হল জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জনতা ব্যাংক প্রতিষ্ঠাকালে এর সাথে ছিল ইউনাইটেড ব্যাংক লিমিটেড এবং ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড। জনতা ব্যাংক লিমিটেড জাতীয়করণ করা হয় ১৯৭২ সালে। তবে ২০০৭ সাল থেকে জনতা ব্যাংকের সাথে লিমিটেড শব্দটি যুক্ত হয়ে জনতা ব্যাংক লিমিটেড কোম্পানির রূপে রূপান্তরিত হয়ে তাদের ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। 

জনতা ব্যাংক লিমিটেড এর দেশের বাইরে কোন শাখা নেই। তবে বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলা মিলিয়ে জনতা ব্যাংক লিমিটেড এর বর্তমান সংখ্যা হল ৯১২টি। জনতা ব্যাংক লিমিটেড এর বর্তমান হেড অফিস ঢাকার মতিঝিলে অবস্থিত। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে জনতা ব্যাংক লিমিটেড এর অবদান কোন ভাবেই অস্বীকার করার সুযোগ নেই।

৩) অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কাকে বলে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো কি কি,

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড অন্যতম। অগ্রণী ব্যাংক এর শাখা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত জেলাগুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড জাতীয়করণ করা হয়েছিল ১৯৭২ সালে। অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড প্রতিষ্ঠাকালের সাবেক হাবিব ব্যাংক এবং সাবেক কমার্স ব্যাংক এর যৌথ প্রযোজনায় গঠিত হয়েছিল। 

বর্তমানে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের সকল ব্যাংকিং কার্যক্রম অনলাইনে এর মাধ্যমে সম্পাদন করা হচ্ছে। বাংলাদেশের যে কয়েকটি রাষ্ট্রয়ত্ত ব্যাংক রয়েছে তাদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলামী ব্যাংক ইউনিট চালু করে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, যা ২০১০ সালে চালু করা হয়েছিল। যেহেতু ব্যাংক টির যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইনে এর মাধ্যমে সম্পাদন করা হচ্ছে, তাই এই ব্যাংকের অনলাইন শাখার সংখ্যা ৯৬২ টি।

৪) রূপালী ব্যাংক লিমিটেড

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কাকে বলে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো কি কি,

বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলোর মধ্যে রূপালী ব্যাংক লিমিটেড অন্যতম। দেশের অর্থনৈতিক বিকাশে রূপালী ব্যাংকের অবদান অনস্বীকার্য। রূপালী ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক কার্যাবলী সম্পাদন করে। এগুলো হলো: 

স্থির ও চলমান জমা, বিনিয়োগ, ব্যক্তিগত ঋণ, বাণিজ্যিক ঋণ, কৃষি ঋন, বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয় বিক্রয়, রেমিটেন্স, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং ইত্যাদি। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম এই বাণিজ্যিক ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৭২ সালে। ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা কালে মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংক, অস্ট্রেলেশিয়া ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের সকল দায় এবং সম্পদ নিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। বর্তমানে রূপালী ব্যাংকের ৫১ শতাংশ মালিকানা সরকারের হাতে রয়েছে এবং বাকি ৪৯ শতাংশ মালিকানা বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের রূপালী ব্যাংকের সংখ্যা রয়েছে ৫৮৬ টি যা সর্বস্তরে তারা অনলাইন এবং অফলাইনের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

৫) বেসিক ব্যাংক লিমিটেড

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কাকে বলে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো কি কি,

বেসিক ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প গুলোকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে তোলার জন্য যে অর্থায়নের প্রয়োজন তার উদ্দেশ্যে ১৯৮৮ সালে বেসিক ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের শতভাগ শেয়ার সরকার ক্রয় করে নেয় এবং এর মালিকানা পরবর্তীতে সম্পন্ন হবে বাংলাদেশ সরকারের ওপর হস্তান্তর করা হয়। বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের সকল অর্থায়ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রদান করা হয়ে থাকে। বেসিক ব্যাংক বিভিন্ন খাতে যে ঋণ বরাদ্দ করে থাকে তার প্রায় অর্ধেক শতাংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য প্রদান করা হয়ে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৭২ টি বেসিক ফ্রেন্ড ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অর্থায়নের জন্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

৬) বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড 

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কাকে বলে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো কি কি,

বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড অন্যতম। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড কে  বিডিবিএল নামে চিনে থাকে। বিডিবিএল প্রতিষ্ঠা করার অন্যতম কারণ হলো দেশের শিল্প খাতে উন্নয়ন। এ লক্ষ্যে ২০০৯ সালে বাংলাদেশের শিল্প ব্যাংক এবং বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থাকে একিভূত করার জন্য বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করা হয়। দেশের বড় এবং মধ্যমেয়াদি শিল্প খাতে ঋণ প্রদান করা এ ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য। শিল্প খাদ প্রসারের জন্য এদেশের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের সংখ্যা ৫০ টি। বর্তমানে দেশের অর্থনীতির ব্যাংকিং ব্যবস্থায় চরম বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক লিমিটেড বর্তমানে বেশ ভালো অবস্থায় রয়েছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংক কোনগুলো? 

বাংলাদেশের প্রধান রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংখ্যা হল ছয়টি‌‌ যা নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তবে বাংলাদেশে এই ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক ছাড়াও আরো তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংক রয়েছে। সেগুলো হলো: 

  • রাজশাহী কৃষি ব্যাংক উন্নয়ন,
  • প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, 
  • বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক।

রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মতো রাষ্ট্রয়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংক গুলোর মালিকানাও সম্পূর্ণরূপে সরকারের হাতে। নিচে এই তিনটি ব্যাংকের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো। 

১. রাজশাহী কৃষি ব্যাংক উন্নয়ন

বাংলাদেশে রাজশাহী কৃষি ব্যাংক উন্নয়ন এর প্রধান লক্ষ্য হলো রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে কৃষি ঋণ সরবরাহ করা। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে ১৯৮৭ সালে রাজশাহী কৃষি ব্যাংক উন্নয়ন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ মিলে বর্তমানে রাজশাহী কৃষি ব্যাংক উন্নয়ন এর শাখার সংখ্যা হল ৩৮৪ টি। এবং রাজশাহী কৃষি ব্যাংক উন্নয়ন এর প্রধান শাখার রাজশাহীতে অবস্থিত।

২. প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক

বিদেশগামী কর্মীদের অল্প সুদে ঋণ প্রদান করার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিদেশগামী কর্মীদের আর্থিকভাবে সুবিধা প্রদান করার জন্য ২০১০ সালে ব্যাংকটি তার কার্যক্রম শুরু করে। বিদেশ থেকে অবসর নিয়ে যেসব কর্মী দেশে আসে তাদের স্বল্প সুদের ঋণ প্রদানের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের অন্যতম উদ্দেশ্য। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এর মোট শাখার সংখ্যা ১০১ টি।

৩. বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংক হলো বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। কৃষি খাতে উন্নতি করা এ ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য, এবং এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ১৯৭৩ সালে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে কৃষি ক্ষেত্রে ছাড়াও আমানত গ্রহণ, ঋণ প্রদান করে থাকে ব্যাংকটি। কৃষি ব্যাংকিং করার পাশাপাশি অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা প্রধানের লক্ষ্যে বর্তমানে বাংলাদেশে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের শাখার সংখ্যা ১০৩৮, যা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

FAQ

১)বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ ১০টি ব্যাংকের নাম কি?

উঃ বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকগুলো হল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কমার্স, পদ্মা, এক্সিম ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী, ন্যাশনাল, ইউনিয়ন ব্যাংক ইত্যাদি।

২)বাংলাদেশের সরকারি ব্যাংক গুলো কি কি?

উঃ বাংলাদেশে রাষ্ট্রায়ত্ত সরকারি ব্যাংক গুলো হল: সোনালী, রূপালী, অগ্রণী, জনতা, বেসিক ব্যাংক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল) অন্যতম।

৩)বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যাংক কোনটি?

উঃ সম্পদ এবং দায়ের দিক বিবেচনা করলে বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যাংক হল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। ২০২১ সালে তুলনায় ২০২২ সালে সম্পদ এবং দায় কিছুটা বাড়িয়ে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড এর রেংকিং কিছুটা বেড়েছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সম্পর্কে আমাদের মতামত

বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণ এবং দেশের সার্বিক অর্থ সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে আসছে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক গুলো কি কি এবং ব্যাংকগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়েছেন এবং ব্যাংক নিয়ে যদি আপনাদের আর কোন তথ্য জানার থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানান। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি জুড়ে আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *