বর্তমান যুগে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পণ্য হস্তান্তর করার জন্য কুরিয়ার সার্ভিস হল সবথেকে বিশ্বস্ত মাধ্যম। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু ফি প্রদান করে প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যে আপনি আপনার পণ্যটি নির্দিষ্ট জায়গায় স্থানান্তরিত করতে পারেন। চিঠির প্রচলন বর্তমানে নেই বললেই চলে। তবুও অফিসিয়াল বিভিন্ন চিঠিপত্র, দলিল সম্পর্কিত বিভিন্ন চিঠি এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পাঠানোর জন্য কুরিয়ার পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে কুরিয়ার সার্ভিসে চিঠি পাঠানোর জন্য তাদের নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম কানুন থাকতে পারে। তবে সামগ্রিক অর্থে সবগুলো কুরিয়ার সার্ভিসের চিঠি পাঠানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট এবং সহজ নিয়ম রয়েছে। যারা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে চিঠি প্রেরণ করতে যাচ্ছেন তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলে থাকছে কুরিয়ারে চিঠি পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
পোস্টের বিষয়বস্তু
কুরিয়ারে চিঠি পাঠানোর জন্য কি কি প্রয়োজন হয়
বাংলাদেশে কিছু জনপ্রিয় কুরিয়ার সার্ভিস রয়েছে যেমন: পাঠাও কুরিয়ার সার্ভিস, সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস এবং ডাক বিভাগ নির্দিষ্ট কিছু অর্থের বিনিময়ে চিঠি আদান প্রদান করে থাকে। পাঠাও কুরিয়ার এর মাধ্যমে অনলাইনে বুকিং এবং চিঠি হোম ডেলিভারি করার সুযোগ রয়েছে। সুন্দরবন কুরিয়ার এর মাধ্যমে বাংলাদেশের যে কোন স্থানে এবং যেকোনো প্রত্যন্ত অঞ্চলে কুরিয়ারের মাধ্যমে চিঠি পাঠানো সম্ভব। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে চিঠি প্রেরণ করার জন্য আপনার নিন্মোক্ত জিনিসগুলোর প্রয়োজন হতে পারে। চলুন দেখে আসি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে চিঠি পাঠাতে কি কি প্রয়োজন হয়:
- ঠিকানা: কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে চিঠি পাঠাতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে চিঠি পাঠানোর ঠিকানা এবং প্রাপকের সঠিক ঠিকানা চিঠির উপরে বসাতে হবে। এক্ষেত্রে কোনভাবে যেন ভুল না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। আপনার লেখাও চিঠিটি খামের ভেতরে ভরে চিঠিতে ঢুকিয়ে তার উপর ঠিকানা লিখুন।
- কুরিয়ার সার্ভিসে ঠিকানা: চিঠি পাঠানোর জন্য আপনি যে কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবহার করবেন তাদের নাম বা তাদের অফিসের ঠিকানা এখানে বসাতে হবে। কুরিয়ার অফিসের ঠিকানা লেখার সময় এর শাখা এবং কুরিয়ার অফিসের যদি কোন নাম্বার থাকে তাও এখানে বসাতে হবে। এক্ষেত্রে ও যেন কোনভাবে ভুল না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
- প্যাকেজিং: চিঠিটি প্যাকেট করার জন্য আপনার একটি এক রঙের খাম লাগবে। তবে কুরিয়ার অফিসের মাধ্যমে চিঠি পাঠানোর সময় বিশেষ করে বাদামি রঙের খামগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মনে রাখবেন অফিসিয়াল চিঠি পাঠানোর জন্য রংবেরঙের খাম ব্যবহার না করাই ভালো। চিঠিটি যে খামে ভরে পাঠাতে চান সে খামটি যেন ছোট হয় সেদিকে খেয়াল করুন।
- পরিচয় পত্র: চিঠি পাঠানোর জন্য কিছু কিছু সময় আপনার পরিচয় পত্রের ফটোকপি কুরিয়ার অফিস কর্তৃক চাওয়া হতে পারে। তবে সব ধরনের চিঠিতে যেমন বিশেষ করে ব্যক্তিগত চিঠিতে পরিচয় পত্রের ফটোকপি চাওয়া হয় না। কিন্তু কুরিয়ার অফিস আপনার কাছ থেকে পরিচয় পত্র চাইলে অবশ্যই তা প্রদান করতে হবে।
- পেমেন্ট প্রদান করুন: চিঠি প্যাকেজিং করে উপরে ঠিকানা লেখে জমা দেওয়ার পর আপনার কাছে কুরিয়ার চার্জ পরিশোধ করার জন্য বলা হবে। এখানে আপনি নগদ অর্থের মাধ্যমে পেমেন্ট সম্পন্ন করতে পারবেন আবার চাইলে বিকাশ বা নগদের মাধ্যমেও পেমেন্ট করা সম্ভব।
কুরিয়ারে চিঠি পাঠানোর বিভিন্ন ধাপ
কুরিয়ারের চিঠি পাঠানোর জন্য কি কি লাগবে তা আমরা ইতোমধ্যে আলোচনা করেছি। চিঠি পাঠানোর জন্য প্রথমত কুরিয়ার অফিসে পৌঁছানোর আগেই চিঠিটি লেখা সম্পূর্ণ করে প্যাক করার চেষ্টা করুন। নিচে আমরা কুরিয়ারে চিঠি পাঠানোর বিভিন্ন ধাপ সম্পর্কে আলোচনা করছি:
১। চিঠিটি প্যাক করুন
চিঠিটি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য প্রথমে সুন্দরভাবে চিঠিটি লিখুন এবং একটি ছোট খামে বা প্যাকেটের মধ্যে চিঠিটি ঢুকিয়ে রাখুন এবং খামের উপরে স্পষ্ট করে চিঠিটি কোথায় পৌঁছাবে সে ঠিকানা লিখুন। এবং এখানে যে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে চিঠিটি পাঠাতে যাচ্ছেন তার ঠিকানা এবং শাখার নাম লিখতে হবে।
২। কুরিয়ার অফিসে পৌঁছান
চিঠিটি ব্যক্তিগতভাবে লিখে নিয়ে কুরিয়ার অফিসে পৌঁছান এবং চিঠিটি যেন কোনভাবে ভাঁজ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৩। চিঠির খামটি জমা দিন
কুরিয়ার সার্ভিস থেকে যে তথ্য জানতে চাওয়া হবে সে তথ্যগুলো পূরণ করে তারপর চিঠির খামাটি জমা দিন এবং এ সময় যদি কুরিয়ার কর্তৃপক্ষ আপনাকে চিঠির উপরে আরো কিছু লিখতে বলে তার লিখে দিন।
৪। কুরিয়ার চার্জ নিশ্চিত করুন
চিঠি পাঠানোর জন্য সামান্য কিছু অর্থ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে কুরিয়ার সার্ভিস থেকে। এখান থেকে যে চার্জ নির্ধারণ করা হবে তা পরিশোধ করার মাধ্যমে আপনার চিঠি পাঠানোর কাজ মোটামুটি সমাপ্ত হবে।
৫। রিসিপ্ট সংগ্রহ করুন
আপনি চিঠিটি পাঠিয়েছেন তার প্রমাণ পত্র হিসেবে কুরিয়ার সার্ভিস আপনাকে একটি রিসিপ্ট প্রদান করবে, যার মাধ্যমে আপনি সহজে চিঠিটি ট্রাক করতে পারবেন, যে আপনার চিঠিটি কোথায় পৌঁছালো।
কুরিয়ার সার্ভিসে চিঠি পাঠানোর খরচ
কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে চিঠি পাঠাতে হলে খরচ নির্ভর করে চিঠির ওজন এবং দূরত্বের উপর। এখানে চিঠির ওজন যত বেশি হবে কুরিয়ার সার্ভিস চার্জ তত বেশি নির্ধারিত হবে। এবং চিঠিটি কত দূরে যাবে তার উপর নির্ধারণ করে কুরিয়ার সার্ভিস চার্জ নির্ধারিত হয়ে থাকে। তবে ধারণা করা হয় মোটামুটি এক থেকে দুই পৃষ্ঠার একটা চিঠির জন্য ডেলিভারি চার্জ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে ২০ টাকা। চিঠি সাথে অতিরিক্ত কোন সুবিধা যদি গ্রহণ করতে চান যেমন ক্যাশ অন ডেলিভারি অথবা ইন্সুরেন্স সুবিধা, তাহলে এর সাথে অতিরিক্ত কুরিয়ার সার্ভিস চার্জ যুক্ত করতে হবে।
আরো পড়ুন
কুরিয়ারে চিঠি পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে আমাদের মতামত
কুরিয়ারে চিঠি পাঠানোর প্রচলন এখন কমে আসলেও মোটামুটি অফিসিয়াল বিভিন্ন চিঠি এখনো কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো হয়ে থাকে। আজকের আর্টিকেলে আমরা কুরিয়ারে চিঠি পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যারা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে চিঠি পাঠাতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে আশা করছি। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাবেন এবং এরকম তথ্যবহুল আর্টিকেল পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন