প্রিয় পাঠক / পাঠিকা, আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ৭ টি মহাসাগরের নাম এবং এর অবস্থান, আয়তন ও গভীরতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। অবস্থান, আয়তন ও গভীরতা এর উপর ভিত্তি করে উন্মুক্ত বিস্তীর্ণ জলরাশিকে মহাসাগর বলা হয়ে থাকে। অন্য কথায় মহাসাগর বা মহাসমুদ্র বলতে বোঝায়, অতি প্রকাণ্ড ও লবণযুক্ত বিশাল জলরাশি যা সমগ্র পৃথিবীকে বেষ্টন করে রয়েছে।
পৃথিবীর এই বিশাল জলধারা এর মধ্যে মোট ৭ টি মহাসাগর রয়েছে। সেগুলো হল: উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর, ভারত মহাসাগর, আর্কটিক মহাসাগর, দক্ষিণ মহাসাগর, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর ও দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর।
পৃথিবীর মোট আয়তনের প্রায় ৭০.৯% স্থান জুড়ে রয়েছে এই মহাসাগর গুলো। মহাসাগর গুলো আবার ছোট ছোট সমুদ্রে বিভক্ত হয়ে রয়েছে। ৭ টি মহাসাগরের নাম এবং মহাসাগর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য আমাদের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
পোস্টের বিষয়বস্তু
মহাসাগর কাকে বলে
অতি প্রকাণ্ড ও লবণযুক্ত বিপুল জলরাশি যা পুরো পৃথিবী জুড়ে বেষ্টিত রয়েছে তাকে মহাসাগর, মহাসিন্ধু বলা হয়ে থাকে। মহাসাগর শব্দটি প্রাচীন গ্রিক শব্দ ওকিআনোজ (Ὠκεανός) থেকে এসেছে। মহাসাগরের জলের গড় লবণাক্ততা ৩.৫%। বিভিন্ন গবেষণা থেকে উঠে এসেছে, মহাসাগরে প্রায় ২,৩০,০০০ সামুদ্রিক ও জলজ প্রাণীর বসবাস রয়েছে।
কিন্তু ধারণা করা হয়, প্রকৃতপক্ষে মহাসাগরের অবস্থিত সামুদ্রিক ও জলজ প্রাণীর সংখ্যা বাস্তবে আরো ১০ গুণ বেশি। মহাসাগর গুলোর মোট আয়তন হল ৩.৬১×১০১৪ বর্গ মিটার। তাইতো ভূমন্ডলে সর্বদা মহাসাগরের একটি বিপুল প্রভাব প্রত্যহ লক্ষ্য করা যায়। মহাসাগর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ভূমন্ডলীয় জীবন এবং জীবনধারায় মারাত্মকভাবে প্রভাব বিস্তার করে।
মহাসাগর কয়টি ও কি কি? পৃথিবীতে কয়টি মহাসাগর আছে?
পৃথিবীপৃষ্ঠে সর্ববৃহৎ মহাসাগরের সংখ্যা মোট ৫ টি। মহাসাগর গুলোর নাম হলো: প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর, ভারত মহাসাগর, উত্তর মহাসাগর, দক্ষিণ মহাসাগর। পৃথিবীর সমস্ত মহাসাগর নিয়ে একটি প্রাচীন বাক্যাংশ প্রচলিত রয়েছে: “সাত সমুদ্র”। প্রায় ১৯ শতক সময়কাল থেকেই এই শব্দটি সাতটি মহাসাগরীয় জলের অন্তর্ভুক্ত। পৃথিবীতে বেষ্টিত সাতটি মহাসাগরের নাম হলো:
- উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর
- আটলান্টিক মহাসাগর
- ভারত মহাসাগর
- আর্কটিক মহাসাগর
- দক্ষিণ মহাসাগর
- দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর ও
- দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর।
৭ টি মহাসাগরের নাম কি
নিচের অংশে আমরা ৭ টি মহাসাগরের নাম: প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর, ভারত মহাসাগর, সুমেরু বা উত্তর মহাসাগর, কুমেরু বা দক্ষিণ মহাসাগর, আর্কটিক মহাসাগর, দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন তাহলে দেরি না করে মহাসাগর গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক:
১) প্রশান্ত মহাসাগর

পৃথিবীর মহাসাগর সম্বন্ধীয় বিভাগগুলির মধ্যে ক্ষেত্রফল এবং গভীরতার বিচারে প্রশান্ত মহাসাগর সর্ববৃহৎ জায়গা জুড়ে রয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগর এর উত্তর দিকে উত্তর মহাসাগর থেকে দক্ষিণ মহাসাগর পক্ষান্তরে সংজ্ঞানুযায়ী অ্যান্টার্কটিকা পর্যন্ত বিস্তৃত৷
প্রশান্ত মহাসাগরের সীমান্তে রয়েছে এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়া। প্রশান্ত মহাসাগরের মোট পানির আয়তন হল ৭১,০০,০০,০০০ কিমি৩ (১৭,০০,০০,০০০ মা৩)। প্রশান্ত মহাসাগর বিশ্ব মহাসাগরের উপক্ষেত্রগুলির মধ্যে সর্বাধিক। মহাসাগরটি পৃথিবীর মোট জলভাগের উপরের অংশের ৪৬ শতাংশ এবং পৃথিবী তলের ৩২ শতাংশ অংশ জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই আয়তন পৃথিবীর একক স্থলভাগ ও জলভাগের ক্ষেত্রফলের তুলনায় ১৪,৮০,০০,০০০ বর্গ কিলোমিটার বেশি। প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত বৃহৎসাগর গুলো হল:
- অস্ট্রেলিয় ভূমধ্যসাগর – ৯.০৮০ মিলিয়ন বর্গকিমি।
- ফিলিপাইন সাগর- ৫.৬৯৫ মিলিয়ন বর্গকিমি।
- কোরাল সাগর- ৪.৭৯১ মিলিয়ন বর্গকিমি।
- দক্ষিণ চীন সাগর- ৩.৫ মিলিয়ন বর্গকিমি।
- তাসমান সাগর- ২.৩ মিলিয়ন বর্গকিমি।
- বেরিং সাগর- ২ মিলিয়ন বর্গকিমি।
- আলাস্কা উপসাগর- ১.৫৩৩ মিলিয়ন বর্গকিমি।
- ওখোৎস্ক সাগর- ১.৫৮৩ মিলিয়ন বর্গকিমি।
- পূর্ব চীন সাগর- ১.২৪৯ মিলিয়ন বর্গকিমি।
- জাপান সাগর- ৯৭৮,০০০ বর্গকিমি।
- তিমুর সাগর-৬১০,০০০ বর্গকিমি।
- সলোমন সাগর -৭২০,০০০ বর্গকিমি.
অবস্থান: প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব দিকে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ অবস্থিত। প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম দিকে এশিয়া ও ওসেনিয়া মহাদেশ অবস্থিত।
আয়তন: প্রশান্ত মহাসাগরের পৃষ্ঠতল এর দৈর্ঘ্য ১৬,৫২,৫০,০০০ কিমি২ (৬,৩৮,০০,০০০ মা২) এবং গড় গভীরতা ৪,২৮০ মি (১৪,০৪০ ফু)। প্রশান্ত মহাসাগরের সর্বাধিক গভীরতা ১০,৯১১ মি (৩৫,৭৯৭ ফু)।
গভীরতা: পৃথিবীর মধ্যে সর্বাধিক গভীরতম এই মহাসাগরটির সর্বোচ্চ গভীরতা ৩৫,৯৫৮ ফুট। এবং প্রশান্ত মহাসাগরের গড় গভীরতা হলো ১৪,০০০ ফুট।
২) আটলান্টিক মহাসাগর
পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাদেশ হিসেবে খ্যাত আটলান্টিক মহাসাগর। পৃথিবীপৃষ্ঠের প্রায় এক পঞ্চমাংশ এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই আটলান্টিক মহাসাগর। ইউরোপের অগণিত মানুষের ধারণা অনুযায়ী, আটলান্টিক মহাসাগর “পুরাতন পৃথিবীকে” “নতুন পৃথিবীর” থেকে আলাদা রাখে। আটলান্টিক মহাসাগরের পশ্চিমে উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকার দ্বারা বেষ্টিত রয়েছে।
আটলান্টিক মহাসাগর সরাসরি ভাবে গ্রীনল্যান্ড সাগর, নরওয়েজীয় সাগর, বেরেন্টস সাগর এবং সুমেরু মহাসাগরের সাথে যুক্ত রয়েছে। আটলান্টিক মহাসাগর ২০° পূর্ব মেরিডিয়ান বরাবর আগুলহাস অন্তরীপ থেকে দক্ষিণ দিকের এন্টার্কটিকা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পরবর্তীতে ভারত মহাসাগরে মিলিত হয়েছে। আটলান্টিক মহাসাগরের অবস্থিত বৃহৎ সাগর গুলো হল:
- ভূমধ্যসাগর – ২.৫১০ মিলিয়ন বর্গকিমি।
- মেক্সিকো উপসাগর – ১.৫৫০ মিলিয়ন বর্গকিমি।
- গিনি উপসাগর – ২.৩৫ মিলিয়ন বর্গকিমি।
- ক্যারিবীয় সাগর – ২.৭৫৪ মিলিয়ন বর্গকিমি।
- সারগাসো সাগর – ৩.৫ মিলিয়ন বর্গকিমি।
- ল্যাব্রাডর সাগর – ৮৪১,০০০ বর্গকিমি।
- আর্মিঙ্গার সাগর – ৭৮০,০০০ বর্গকিমি।
- ব্যাফিন উপসাগর – ৬৮৯,০০০ বর্গকিমি।
- গ্রীনল্যান্ড সাগর – ১.২০৫ মিলিয়ন বর্গকিমি।
- উত্তর সাগর- ৫৭৫,০০০ বর্গকিমি।
- কৃষ্ণ সাগর – ৪৩৬,০০০ বর্গকিমি।
- বালটিক সাগর – ৩৭৭,০০০ বর্গকিমি।
- সেন্ট লরেন্স উপসাগর- ২২৬,০০০ বর্গকিমি।
- অ্যাড্রিয়াটিক সাগর – ১৩৮,০০০ বর্গকিমি।
- জেমস উপসাগর – ৬৮,৩০০ বর্গকিমি।
অবস্থান: আটলান্টিক মহাসাগরটি পশ্চিম দিকে ইউরোপ ও আফ্রিকা অবস্থিত এবং পূর্ব দিকে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা অবস্থিত।
গভীরতা: আটলান্টিক মহাসাগরের গড় গভীরতা হলো ৩,৬৪৬ মি (১১,৯৬২ ফু)। এবং মহাসাগরটি সর্বাধিক গভীরতা হলো ৮,৩৭৬ মি (২৭,৪৮০ ফু)। মহাসাগরটির পানির আয়তন হলো ৩১,০৪,১০,৯০০ কিমি৩ (৭,৪৪,৭১,৫০০ মা৩)।
আয়তন: আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূলের দৈর্ঘ্য হল ১,১১,৮৬৬ কিমি (৬৯,৫১০ মা) প্রান্তিক সমুদ্রসহ আটলান্টিক মহাসাগরের পৃষ্ঠতল অঞ্চল এর দৈর্ঘ্য ১০,৬৪,৬০,০০০ কিমি২ (৪,১১,০০,০০০ মা২)। নর্থ আটলান্টিক এর দৈর্ঘ্য ৪,১৪,৯০,০০০ কিমি২ (১,৬০,২০,০০০ মা২), সাউথ আটলান্টিক এর দৈর্ঘ্য ৪,০২,৭০,০০০ কিমি২ (১,৫৫,৫০,০০০ মা২) ।
৩) ভারত মহাসাগর

পৃথিবীর মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম মহাসাগর হিসেবে ভারত মহাসাগরকে বিবেচনা করা হয়। পৃথিবীর মোট জলাশয়ের প্রায় ২০ শতাংশ ভারত মহাসাগর এর দখলে রয়েছে। ভারত মহাসাগর এর উত্তর দিকে ভারতীয় উপমহাদেশ অবস্থিত।
ভারত মহাসাগরের পশ্চিম দিকে অবস্থিত পূর্ব আফ্রিকা এবং পূর্ব দিকে অবস্থিত ইন্দোচীন, সুন্দা দ্বীপপুঞ্জ এবং অস্ট্রেলিয়া। ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত দক্ষিণ মহাসাগর যা অনেকে এন্টার্কটিকা বলে চিহ্নিত করে থাকেন।
স্থানাঙ্ক অনুযায়ী এর অবস্থান ২০° দক্ষিণ ৮০° পূর্ব। ভারত মহাসাগর ঘিরে ডারবান, মুম্বই, পার্থ, কলম্বো, পাডাং, ম্যাপুটো জনবসতি অবস্থিত।
ভারত মহাসাগরের সর্বাধিক গভীরতা ৭,২৫৮ মি (২৩,৮১২ ফু) এবং গড় গভীরতা হলো ৩,৭৪১ মি (১২,২৭৪ ফু)। এছাড়া এই মহাসাগরের উপকূলের দৈর্ঘ্য হলো ৬৬,৫২৬ কিমি (৪১,৩৩৭ মা)। ভারত মহাসাগরের সর্বাধিক দৈর্ঘ্য হল ৯,৬০০ কিমি (৬,০০০ মা) (অ্যান্টার্কটিকা থেকে বঙ্গোপসাগর), এবং সর্বাধিক প্রস্থ হল ৭,৬০০ কিমি (৪,৭০০ মা) (আফ্রিকা থেকে অস্ট্রেলিয়া)।
এবং এই মহাসাগরের পৃষ্ঠতল অঞ্চলের পরিসীমা হল ৭,০৫,৬০,০০০ কিমি২ (২,৭২,৪০,০০০ মা২)। পৃথিবীর ৩৬ টি জীব বৈচিত্রের হটস্পট এর মধ্যে অন্তত ২৫ ভাগ এর অস্তিত্ব রয়েছে ভারত মহাসাগরে। ভারত মহাসাগরের সীমান্তবর্তী দেশগুলো হলো:
- ইজরায়েল,
- জর্ডান,
- অস্ট্রেলিয়া,
- ভারত,
- সৌদি আরব,
- কুয়েত,
- ইরাক,
- ইরান,
- মালদ্বীপ,
- শ্রীলংকা,
- মিয়ানমার,
- বাংলাদেশ,
- থাইল্যান্ড,
- পাকিস্তান,
- কাতার,
- ইন্দোনেশিয়া,
- সোমালিয়া,
- সুদান,
- মিশর,
- কেনিয়া,
- ইরিত্রিয়া।
অবস্থান: ভারত মহাসাগর এর উত্তর দিকে ভারতীয় উপমহাদেশ অবস্থিত। ভারত মহাসাগরের পশ্চিম দিকে অবস্থিত পূর্ব আফ্রিকা এবং পূর্ব দিকে অবস্থিত ইন্দোচীন, সুন্দা দ্বীপপুঞ্জ এবং অস্ট্রেলিয়া।
গভীরতা: ভারত মহাসাগরের সর্বাধিক গভীরতা ৭,২৫৮ মি (২৩,৮১২ ফু) এবং গড় গভীরতা হলো ৩,৭৪১ মি (১২,২৭৪ ফু)।
আয়তন: । ভারত মহাসাগরের সর্বাধিক দৈর্ঘ্য হল ৯,৬০০ কিমি (৬,০০০ মা) (অ্যান্টার্কটিকা থেকে বঙ্গোপসাগর), এবং সর্বাধিক প্রস্থ হল ৭,৬০০ কিমি (৪,৭০০ মা) (আফ্রিকা থেকে অস্ট্রেলিয়া)।
৪) উত্তর মহাসাগর
উত্তর গোলার্ধের সুমেরু অঞ্চলে অবস্থিত তুলনামূলক কম গভীর এবং বিশ্বের সর্বাপেক্ষা ক্ষুদ্র মহাসাগরের মধ্যে অন্যতম হলো উত্তর মহাসাগর। পৃথিবীর প্রধান পাঁচটি মহাসাগরের মধ্যে উত্তর মহাসাগর অন্যতম। আন্তর্জাতিক জললেখচিত্রন সংস্থা এই জলধারা কে মহাসাগরের স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে বিভিন্ন সমুদ্র বিজ্ঞানীদের মতে, উত্তর মহাসাগর এর অন্য নাম সুমেরু ভূমধ্যসাগর (Arctic Mediterranean Sea), সুমেরু সাগর (Arctic Sea)।
পৃথিবীর সবগুলো মহাসাগরের উত্তরতম অংশ হিসেবেও উত্তর মহাসাগরকে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। উত্তর মহাসাগর হল পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস এর অন্যতম উৎস। তাছাড়া এই মহাসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে প্লেসার মজুদ, পলিমেটালিক নোডুলস, বালি ও নুড়ি সমষ্টি, মাছ, সীল এবং তিমি পাওয়া যায়। উত্তর মহাসাগরে অবস্থিত বৃহৎ সাগর গুলো হল:
- পূর্ব সাইবেরীয় সাগর – ৯ লাখ ৮৭ হাজার কিলোমিটার,
- গ্রিনল্যান্ড সাগর- ১.২০৫ মিলিয়ন কিমি২।
- কারা সাগর – ৯ লাখ ২৬ হাজার কিলোমিটার।
- চুকচি সাগর – ৬ লাখ ২০ হাজার কিলোমিটার,
- লাপ্তেভ সাগর – ৬ লাখ ৬২০০০ কিলোমিটার।
- হাডসন উপসাগর – ১.২৩ মিলিয়ন কিমি২।
- পেচোরা সাগর – ৮১,২৬৩ কিমি২।
- লিংকন সাগর – ৬৪ হাজার কিলোমিটার।
- বোফর্ট সাগর – ৪ লাখ ৭৬ হাজার কিলোমিটার।
অবস্থান: সুমেরু বা উত্তর মহাসাগরের দক্ষিণ দিকে রয়েছে উত্তর আমেরিকার কানাডা এবং গ্রিনল্যান্ড ও ইউরোপ।
আয়তন: সুমেরু মহাসাগর বা উত্তর মহাসাগরের মোট আয়তন হলো ১৫ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার।
গভীরতা: উত্তর মহাসাগরের সর্বাধিক গভীরতা হলো ১৮,০০০ ফুট এবং গভীরতা প্রায় ২,৭০০ ফুট।
৫) দক্ষিণ মহাসাগর

দক্ষিণ মহাসাগর পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম একটি মহাসাগর যার প্রায় সম্পূর্ণ অংশ বরফ দ্বারা আবৃত। দক্ষিণ মহাসাগর দক্ষিণ তম জল নিয়ে বেষ্টিত যা ৬০° দক্ষিণ অক্ষাংশের দক্ষিণদিকে অবস্থিত। দক্ষিণ মহাসাগরটি প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগর থেকে বেশ ছোট।
কিন্তু এই মহাসাগরটি আর্কটিক মহাসাগরের চেয়ে আকারে বেশ বড়। সবগুলো মহাসাগরের মধ্যে দক্ষিণ মহাসাগরকে পৃথিবীর নবীন মহাসাগর বলে চিহ্নিত করা হয়। দক্ষিণ মহাসাগরের অন্তর্গত বৃহৎ সাগর গুলোর নাম হল:
- কসমোনটস সাগর – ৬ লাখ ৯৯ হাজার বর্গ কিলোমিটার।
- ডেভিস সাগর – ২১ হাজার কিলোমিটার।
- লাজারেভ সাগর – ৯ লাখ ২৯ হাজার বর্গকিলোমিটার।
- কমনওয়েলথ সাগর -২ লাখ ৫৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার।
- বেলিংশসেন সাগর – ৪ লাখ ৮৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার।
অবস্থান: দক্ষিণ মহাসাগরটি এন্টার্কটিকা মহাদেশে উত্তরাংশের চারদিকে বেষ্টিত।
আয়তন: দক্ষিণ মহাসাগরের আয়তন হল ১৪.৮ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার।
গভীরতা: দক্ষিণ মহাসাগরের সর্বাধিক গভীরতা প্রায় ১৮,৭৯৪ ফুট এবং গড় গভীরতা প্রায় ৪,৯২০ ফুট।
৬)আর্কটিক মহাসাগর
পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট মহাসাগর হল আর্কটিক মহাসাগর। আর্কটিক মহাসাগর এর আয়তন
(5,430,000 বর্গ মাইল)। ইন্টারন্যাশনাল হাইড্রোগ্রাফিক অর্গানাইজেশন (IHO) এ কে মহাসাগর হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও অনেক সমুদ্র বিজ্ঞানী একে আর্কটিক ভূমধ্যসাগর হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
আর্কটিক মহাসাগরের উপরের অংশ প্রায় 50 মিটার পর্যন্ত লবণাক্রতা কম। আর্কটিক মহাসাগরে প্রচুর পরিমাণে পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া যায়। আর্কটিক মহাসাগর এর পাশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, কানাডা, নরওয়ে এবং ডেনমার্ক অবস্থিত।
৭) দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর

দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর অন্যান্য বৃহৎ মহাসাগর গুলোর মধ্যে অন্যতম। দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের পার্শ্ববর্তী দেশগুলো হলো: আফ্রিকা, আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, ব্রাজিল, ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ ইত্যাদি। মাদাগাস্কার দ্বীপটি দক্ষিণ আটলান্টিক এবং ভারত মহাসাগরের মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত। আফ্রিকা মহাদেশ এবং দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের পূর্ব উপকূল ঘিরে দক্ষিণ আটলান্টিক অবস্থিত।
মহাসাগরটির দক্ষিণে এন্টার্কটিকা অবস্থিত। এবং দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের পূর্বে ২০ ডিগ্রী পূর্ব মেরিডিয়ান যা ভারত মহাসাগরের সাথে সরাসরি ভাবে মিলিত হয়। দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার। এবং উত্তর দক্ষিণ মিলে প্রস্থ হয় প্রায় ৫ হাজার কিলোমিটার।
৭ টি মহাসাগর সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নউত্তর
১)পৃথিবীর মহাসাগর গুলির নাম কি?
প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর, ভারতীয় মহাসাগর, আর্টিক মহাসাগর, এবং দক্ষিণ মহাসাগর।
২)পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট মহাসাগরের নাম কি?
পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট মহাসাগরের নাম হলো আর্কটিক সাগর।
৩)পৃথিবীর প্রথম বৃহত্তম মহাসাগর কোনটি?
পৃথিবীর বৃহত্তম মহাসাগরের নাম হলো প্রশান্ত মহাসাগর।
৪)পৃথিবীর শীতলতম মহাসাগর কোনটি?
পৃথিবীর শীতলতম মহাদেশের নাম হলো আর্কটিক মহাসাগর।
৫)ভারতের বৃহত্তম মহাসাগর কোনটি?
ভারতের বৃহত্তম মহাসাগর হল ভারত মহাসাগর।
৭ টি মহাসাগর সম্পর্কে আমাদের মতামত
আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা ৭ টি মহাসাগরের নাম এবং মহাসাগর গুলোর অবস্থান, গভীরতা, আয়তন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। পৃথিবীর বৃহত্তম পাঁচটি মহাসাগরের সাথে যেসব সাগরগুলো অতোপ্রতভাবে জড়িত রয়েছে সেসব সাগর গুলোর নাম এবং দৈর্ঘ্য আজকের আর্টিকেলে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
মহাসাগর সম্পর্কে আপনাদের আর কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদেরকে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানান। এবং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এমন আরো গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।